এস.এম আকাশ, ফরিদপুর:
অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, যেখানে সেখানে ময়লা আর্বজনা, ঠিকমত রোগীদের সেবা না পাওয়া, বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকের দালালের আনাগোনা এমনই অবস্থা ছিল ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিত্র। তবে হাসপাতালের নতুন পরিচালক ডাঃ মহাঃ এনামুল হকের প্রচেষ্টায় বদলে যাচ্ছে হাসপাতালের চিত্র। সেবার মান বৃদ্ধি পাওয়ায় দিন দিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা । রোগী ও স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে আশার আলো।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৫০০ শয্যার অনুমোদন এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড় রোগীর সংখ্যা বেড়ে এখন সাড়ে ৮০০ থেকে ৯০০ জনে উন্নতি হয়েছে। এখানে প্রতিদিন ১০ টাকা টিকিট কেটে বিভিন্ন রোগের ডাক্তার দেখানোর সুযোগ পাচ্ছেন প্রায় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০জন। এখানে ৮০২ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে মোট রয়েছে ৬৭৫ জন। এর মধ্যে ১২৭ জনের পদ খালী রয়েছে। ১২৭ জন কম থাকলেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সকল ডাক্তারগণ।
হাসপাতালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭ হাজার ৫শ ৯৮জন রোগী। জরুরী চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়ী ফিরেছে ৯৪৬ জন রোগী। ১০ টাকা টিকিটের মাধ্যমে বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩১ হাজার ৩শ ৮১জন রোগী।
সেবা নিতে আসা এক রোগী মোছা. জেসমিন আক্তার জানান, আগের তুলনায় হাসপাতালটির অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
দৈনিক বাংলাদেশের আলো ও দি ডেইলি আওয়ার টাইমস পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি সেতু আক্তার বলেন, ডাঃ এনামুল হক হাসপাতালটি খুব সুন্দর করে সাজিয়েছেন। প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকলেও তিনি ও অন্যান্য চিকিৎসকরা যে কষ্ট করেন তা প্রশংসনীয়।
হাসপাতালের প্রধান সহকারী মোঃ মোবাশ্বাল হাসান জানান, এই হাসপাতালে জরুরীভাবে লোকবল প্রয়োজন। ৫০০শয্যার অনুমোদন এই হাসপাতালে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা ৯০০জন। জনবল সংকটের কারনে প্রশাসনিক কাজ করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা: মহাঃ এনামুল হক জানান, আমি গত ২৫ আগস্ট এই হাসপাতালে যোগদানের পর প্রথমেই হাসপাতালের সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেস্টা করছি।
তিনি বলেন, আগে এখানে ঊর্ধ্বতন অফিসের প্রেরিত চিঠির জবাব যথা সময়ে দেয়া হতো না। স্টোর রুমের জনবল সংকটের কারনে অনেক সরকারী ওষুধ নষ্ট হতো । আমি এসে স্টোর রুম তদারকি করার কারণে এখন আর ওষুধ নষ্ট হয় না। সব ওষুধ ঠিক মতো রোগীদেও দেওয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, এখানে রান্না ঘরের তদারকি করার কারণে রান্নার মান অনেক উন্নয়ন হয়েছে। বিদ্যুত অপচয় ও ব্যবহার সঠিক নিয়মের মধ্যে আনা হয়েছে। পেইং বেড কেবিন থেকে আগে প্রতি সপ্তাহে ১লাখ ৮০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২লাখ টাকা আয় হত। এখন সেখানে তদারকি করার কারনে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৪ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। তিনি বলেন, হাসপাতালে নিরাপত্তা প্রহরীসহ অন্যান্য পদে জনবল বাড়ানো হলে সেবারমান আরো বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।