English

বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি কারণেই কামার শিল্পীদের মাঝে নেই হাস্যজ্জল!

বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি কারণেই কামার শিল্পীদের মাঝে নেই হাস্যজ্জল!
সারাদেশ চট্টগ্রাম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ঈদুল আজহার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বৃদ্ধি পেয়েছে কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা । পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ততা সময় পার করছেন বিজয়নগরের কামার শিল্পীরা। সার্বিক বন্যার পরিস্থিতি কারণে ব্যস্ততা সময় পার করেও তাদের মুখে নেই কোনো ধরনের হাস্যজ্জল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলার  ঈদুল আজহার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বৃদ্ধি পেয়েছে কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা সময়।

কোরবানির পশু জবাই চামড়া ছড়ানো, মাংস কাটার জন্য প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম সান দেয়া ও তৈরিতে তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে বহুগুন।পশু কোরবানির পর মাংস কাটার জন্যই অন্যতম সরঞ্জাম ছুরি, চাপাতি, দা ও বোটি ইত্যাদি।

সারা বছরই এসব জিনিসের চাহিদা থাকলেও কোরবানির ঈদকে ঘিরে এর চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুন আর কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা ও টুংটাং শব্দের মুখরিত হয়ে উঠে কামার শিল্পীদের আশপাশের এলাকায়। 

আজ বিজয়নগর  উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা যায়, টুংটাং শব্দে মুখরিত কামার শিল্পীরা,নাওয়া খাওয়া ভুলে কাজ করছেন তারা। কুরবানিকে সামনে রেখে ক্রেতারাও ভিড় জমান কামার গলিতে।

স্থানীয় কামাররা জানান, বিদেশ থেকে আমদানি করা আধুনিক যন্ত্রপাতির কারণে, কৃষিকাজে কামারদের তৈরি পুরনো উপকরণ এখন আর তেমন একটা ব্যবহার হয় না। একারনে কৃষি উপকরণ সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি জড়িত কামারদের সারা বছর কাজ নেই বললেই চলে। তবে প্রতিবছর কোরবানি ঈদের আগে একমাস ব্যস্ত সময় পার করেন তারা।

বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামের কামার কানাই  কর্মকার বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ এই পেশার সঙ্গে জড়িত আছি। বাপ-দাদার আমল থেকে এই কাজ করে আসছি। বাবার পেশাকে আগলে রেখে একাজ করে যাচ্ছি। সাধারণত ধান কাটার মৌসুম ও কোরবানির সময় কাজের চাপ বেশি থাকে এবং তৈরি সরঞ্জাম বেশি বিক্রি হয়। তবে এই বছর কাজের চাহিদা আগের বছর  অনুযায়ী একটু কম।

উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়নের রামপুর বাজারের আরেক কামার শিল্পী নিত্য কর্মকার বলেন, সরঞ্জাম তৈরির উপকরন কয়লার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এর মধ্যে লোহার দামও বেড়ে যাওয়ায় ছুরি, চাপাটি, দা বটির দাম বেশি পড়ছে। সঠিক মজুরিও পাচ্ছিনা। সংসার চালাতেও খুব হিমশিম খেতে হচ্ছে।আর বাজারে যে পরিমাণ নিত্যপণ্য দাম বাড়ছে তাতে আমাদের মতো গরীব লোকদের সংসার নিয়ে অসহায় মধ্যে দিনযাপন করতে হয়।

এই বাজারের আরেক কামার শিল্পী মানিক কর্মকার বলেন,আমাদের এলাকায় বন্যার পরিস্থিতিতে মনে হয় অনেকটা মন্দা যাচ্ছে এই ব্যবসা, আর সরঞ্জাম তৈরির উপকরণ কয়লার দাম বৃদ্ধি হওয়া এর মধ্যে লোহার দামও বেড়ে যাওয়ায় ছুরি, চাপাটি, দা বটির দাম বেশি পড়ছে। সঠিক মজুরিও ঠিকভাবে পাচ্ছিনা,তাই পরিবারের লোকজন নিয়ে খুবই কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করতে হয়। 

বিজয়নগর উপজেলার সিংগারবিল বাজারে কামার শিল্পী দুলাল কর্মকার (৫৫) বলেন,দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবৎ এই পেশার সঙ্গে জড়িত আছি। তাছাড়া বাপ-দাদার আমল থেকে এই কাজ করে আসছি।বাবার পেশাকে আগলে রেখে একাজ করে যাচ্ছি।

সরঞ্জাম তৈরির উপকরন কয়লার দাম বেড়েছে আর লোহার দামও বেড়ে যাওয়ায় ছুরি, চাপাটি, দা বটির ইত্যাদি  দাম বেশি পড়ছে। সঠিক মজুরিও পাচ্ছিনা। সংসার চালাতেও খুব হিমশিম খেতে হচ্ছে।আর বাজারে যে পরিমাণ নিত্যপণ্য দাম বাড়ছে তাতে আমাদের মতো গরীব লোকদের  পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলাফেরায় করতে খুবই কষ্ট হয়। আর অন্য কাজ জানা না থাকায় বাপ দাদার আমলের কাজের উপর নির্ভর করে চলতে হয়।


আশীষ সাহা