আশীষ সাহা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার
জেলায় আখাউড়া পৌর শহরের রাধানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অরুন
সংঘের পূজার মণ্ডপ ঘিরে পদ্মাসেতু, সংসদ ভবন, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল,
আশ্রয়ণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, আর মডেল মসজিদ।
বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে স্থাপনার প্রেক্ষিতে গড়ে তোলা হয়েছে আখাউড়ায়,রাধানগর অরুন সংঘের পূজার মণ্ডপ। শিল্পীর নিখুঁত কারুকাজ আর রং তুলির আঁচড়ে সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে শিল্পকর্ম। যেন ছোট্ট পরিসরে স্বপ্নের বাংলাদেশ।
অরুণ সংঘের আয়োজনে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে
দুইদিন ব্যাপি এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে থাকছে ধর্মীয় আলোচনা,
ব্রাহ্মণসংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পূজা উপলক্ষে ব্যতিক্রমী এই
আয়োজন দর্শনার্থীদের বেশ নজর কেড়েছে। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন
কর্মকাণ্ডে ওইসব দৃষ্টি নন্দন স্থাপন দিয়ে পূজার মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে ।
আগত
দর্শনার্থীদের মধ্যে অনেকেই সেলফি তুলছেন ছোট্ট পরিসরে স্বপ্নের বাংলাদেশ
স্থাপনার কাছে গিয়ে। বৈচিত্রময় সাজসজ্জা আর দৃষ্টিনন্দন গৌরবের ওইসব
স্থাপনাগুলো আকৃষ্ট করছে আগত দর্শনার্থীদের ওইসব স্থাপনাগুলো দেখলে মনে হয়
যেন সরাসরি গিয়ে দেখা হচ্ছে। যেন ধরার কোনো উপায় নেই সেগুলি কৃত্রিমভাবে
তৈরি। সম্পূর্ণ স্থান জুড়ে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন চিত্রের যেন
সমাহার ঘটিয়েছেন তারা। দেশের দৃষ্টি নন্দন স্থাপনার আদলে পূজার মণ্ডপ তৈরি
করায় উদ্যোক্তাদের সাধুবাদ জানাচ্ছেন আগত দর্শনার্থীরা।
পৌর শহরের
রাধানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের গেটে
পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ১০০ ফুট লম্বা পদ্মা সেতুর নমুনা। সম্পূর্ণ ককশিট দিয়ে
সেতুর অবিকল নকশা নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুর ভেতরে রয়েছে ট্রেন।বিদ্যালয়ের
ভেতরে একপাশে মেট্রোরেল, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের আদলে কয়েকটি ঘর। বঙ্গবন্ধু
টানেল, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র। একপাশে সংসদ ভবন। সংসদ ভবনেই হবে পূজার
আনুষ্ঠানিকতা। পূজা মণ্ডপ হলেও এখানেও শোভা পাচ্ছে মডেল মসজিদের একটি
নমুনা।
রাতের ঝলমলে বিদ্যুতের আলোয় স্বপ্নের পদ্মা সেতুসহ ওইসব দৃষ্টি নন্দন স্থাপনাগুলোকে আসলেই সত্যিকারের মতো মনে হয়।
আমাদের
আখাউড়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির উপজেলা । এখানে সব ধর্মের লোকজনরা উৎসব
মুখর পরিবেশে যার যার ধর্মের অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন একে অপরের সাথে।
শিক্ষার্থী
দোলা সাহা বলেন, আমি বাস্তবে মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু আজও দেখিনি। তবে
আখাউড়া অরুণ সংঘের পৃজাতে এসে দেখে খুবই ভালো লাগছে আর এটি একটি শিক্ষনীয়
প্রতিস্থাপনা উপস্থাপন করেছে। আমার কাছে এগুলো দেখে খুবই ভালো লাগছে। তাই
অরুণ সংঘের সকলকে ধন্যবাদ জানাই আপনারা আগামীতে আরও ভাল কিছু করবেন আর
আমরা সেই প্রত্যাশায় থাকবো।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আগত শিক্ষার্থী জয়
সাহা, বলেন, এই অরুন সংঘের পৃজা প্রতিবছরই ব্যতিক্রমী আয়োজন করে থাকে।
আমরাও সেই অপেক্ষায় থাকি। সত্যিই আমি হতবাক হয়েছি অরুন সংঘের এরকম
ব্যতিক্রমী আয়োজন করার জন্য। দেশের উন্নয়ন চিত্র এভাবে তুলে ধরেছে যা
প্রশংসার বিষয় ও শিক্ষনীয় বিষয় ।
শিক্ষার্থী দিয়া সাহা ও গোপাল
বলেন, এখানে ঘুরতে এসে খুবই ভালো লেগেছে। দেখলাম অনেক সুন্দর করে
পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, আশ্রয়ণ প্রকল্প, পারমাণবিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সংসদ ভবন আর মডেল মসজিদের ঘিরে প্যান্ডেল করা হয়েছে। আমি
এখনো বাস্তবে না দেখলেও অনেকটাই বাস্তবের মতো লাগলো।
অরুণ সংঘের
সভাপতি বিশ্বজিৎ পাল বাবু বলেন, প্রায় ৪০ বছর আগে অরুন সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়।
মূলত স্বরসতী পূজার আয়োজন সংগঠনটি প্রথম দিকে ছোট্ট পরিসরে করা হয়। বিগত
৬-৭ বছর ধরে থিম পূজার আয়োজন বড় আকারে করা হচ্ছে। একেক বছর একেকটি ভিন্ন
থিম প্রদর্শন করা হয় আর আমাদের অরুণ সংঘের সকলই সেইটা করার জন্য সার্বিক
চেষ্টা করে থাকে।