শাওনের মৃত্যু দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফতুল্লার নবীনগর এলাকায় শাওনের বাড়িতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। পরে শাওনের কবরে গিয়ে দোয়া করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দীর্ঘ এক যুগ ধরে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। গণতন্ত্রের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। শুধু শাওন নয় অসংখ্য জায়গায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করা হয়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারে বাধা দিচ্ছে। এজন্য ঐক্যবদ্ধভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
শাওন যুবদলের রাজনীতি করতেন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, শাওন যুবদলের রাজনীতি করতো এবং যুবদলের কর্মী ছিল সেটাও প্রমাণিত হয়েছে। যদি সে রাজনীতি নাও করে তাও একজনকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে মেরে ফেলার কোনো অধিকার পুলিশের নেই। পুলিশ মিথ্যাচার করছে। পুলিশের গুলিতেই শাওনের মৃত্যু হয়েছে, এটা প্রমাণিত। শাওনকে হত্যার দায় তারা কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারে না।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল।
এদিকে ফখরুলের আগমনের খবরে বাড়ির আশেপাশে প্রচুর নেতাকর্মী জড়ো হন। তারা শাওনের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
এর আগে শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) বড় ভাই মিলন প্রধান ও মামা মোতাহার হোসেনের কাছে শাওনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শাওনের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। রাত দেড়টার দিকে নবীনগর শাহওয়ার আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে নবীনগর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এদিকে রাতে শাওনকে যুবদল নয় যুবলীগ কর্মী দাবি করে তার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে তারা সেখানে অবস্থান নেন। বিপরীতে বিএনপির নেতাকর্মীরা আসতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে শাওন মারা যান । এছাড়া পুলিশের ১৫ জন এবং বিএনপির প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। বিএনপির আহত নেতাকর্মীদের মধ্যেই অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।