নিজস্ব প্রতিবেদক
বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার চোখে সরষে ফুল দেখছে বলে
মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার গুলশানে
দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এখন
গভর্নমেন্ট চোখে সরষে ফুল দেখছে, দেখতে হবেই। জনগণ ফুঁসে উঠছে, ফুঁসে
উঠবেই এবং তাদের পতন ত্বরান্বিত হবে।’
গতকাল সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির
সভার সিদ্ধান্ত জানাতে বিএনপি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। চলমান বিদ্যুৎ-সংকটের
জন্য সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও পরিকল্পনার অভাবকে দায়ী করেন মির্জা ফখরুল। তিনি
বলেন, সরকারের দুর্নীতি, পরিকল্পনার অভাব এবং অযোগ্যতার কারণেই লোডশেডিং ও
জনভোগান্তি। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে এই সংকটের প্রভাব পড়বে। শ্রীলঙ্কায় যে
পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তারই শুরু বলেও মনে করছেন তিনি।
দলের স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য, মুদ্রাস্ফীতি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের বিরুদ্ধে জনরোষকে ভিন্নদিকে নিতে পরিকল্পিতভাবে নড়াইলে সাম্প্রদায়িক হামলা করা হয়েছে বলে মনে করছে স্থায়ী কমিটির সভা।’ নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। সিইসি এখন হাস্যকর ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১০ বছর ধরে প্রমাণিত হচ্ছে যে, দলীয় সরকারের অধীনে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
সংকট উত্তরণের জন্য বরাবরের মতো আবারও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান ফখরুল। তাঁর মতে, এ ছাড়া সংকট উত্তরণের আর কোনো পথ নেই। স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পানি ও ওষুধের দাম কমানোর দাবিতে বিএনপি প্রতিবাদ সভা করবে বলেও জানান ফখরুল। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো মহানগর ও ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রতিবাদ সভা করবে বলে জানান তিনি। ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ানো নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি মনে করে, এ নিয়ে গত ১৪ বছরে অন্তত ১৫ বার পানির দাম বাড়ানো হলো। অথচ ঢাকায় নাগরিকেরা শতকরা ৪০ ভাগও সুপেয় পানি পায় না। উপরন্তু ওয়াসার পানি ময়লা ও জীবাণুযুক্ত হওয়ায় পান করার অযোগ্য।
সভায় অবিলম্বে পানির দাম কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে আনা এবং পানির গুণগত মান বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, একই সঙ্গে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ৫৩টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয় সভায়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সভায় ১৬ জুলাই রাতে সার্বিয়া
থেকে বাংলাদেশে সমরাস্ত্র নিয়ে আসার সময় ইউক্রেনের একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত
হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে আইএসপিআরের দুই রকম বক্তব্যে বিস্ময়
প্রকাশ করা হয়। সার্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ভাষ্য এবং আইএসপিআরের বক্তব্য
সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে সরকারের
কাছে প্রকৃত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়।
সিটি/আরএ/১৯ জুলাই,২০২২