আশীষ সাহা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি :
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ তথা আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এম.পি’র ‘পতাকাতলে’ আসার জন্য বিএনপি নেতাদেরকে আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ। মন্ত্রীর সংসদীয় এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ এ আহবান জানিয়েছেন।
সোমবার (১ মে) দুপুরে হওয়া এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদেরকে প্রশ্নের জবাবে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ‘আমি বিএনপি’র বর্তমান কমিটির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরকে বলেছি ভোটে তো আপনারা কাউকে এম.পি নির্বাচিত করবেন। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিতলে তো আবার মন্ত্রী হবে। তাই আসুন আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা একই পতাকাতলে গিয়ে কাজ করি।’
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায়ে দলকে শক্তিশালী করা, সাংগঠনিক কর্মকান্ড ও আইনমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা বিষয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজল সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সমাপনী বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী।
এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন বাবুল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ ভুঁইয়া বাদল, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. আতাউর রহমান নাজিম, আব্দুল মমিন বাবুল, ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায়ে আবারো কসবা-আখাউড়া আসন থেকে নির্বাচন করবেন আনিসুল হক। ২ মে থেকে তিনি আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন। এ সময় তিনি উপজেলার মনিয়ন্দের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে গণসংযোগ ও মতবিনিময় করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল হকের হাত ধরে হওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরা হয়। এ সময় জানানো হয়, দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী এলজিইডির মাধ্যমে ২২৮ কোটি টাকা, পিআইও দপ্তরের মাধ্যমে ৮৭ কোটি টাকা, পৌরসভার মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেন। ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌরসভার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩২ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবন মেরামতের জন্য এক কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। আনিসুল হক শুধু সরকারি বরাদ্দের দিকে না তাকিয়ে উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য ব্যক্তিগতভাবেও টাকা খরচ করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, পৌরসভার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের জন্য জমি ক্রয়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ টেকসই করতে ৬০ লাখ টাকা প্রদান, একটি বিদ্যালয়ের জন্য জমি ক্রয়ের টাকা দেওয়া। মন্ত্রীর আমলে অনেক বেকার যুবক যুবতীর চাকরি হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি-জামায়াতের কারো চাকরি হওয়ার কথা অস্বীকার করেন। সাংগঠনিক কার্যক্রমকে গতিশীল করতে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পরপরই আখাউড়ার কমিটি গঠন করা হবে বলে এ সময় উল্লেখ করা হয়। ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগ নয়, জনগণই বিএনপিকে মোকাবেলা করবে বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা গর্ব করে বলতে পারি আমাদের সংসদ সদস্য একজন সৎ, যোগ্য, মেধাবী ও উন্নয়নমুখী মানুষ। দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সরকারের অন্যতম নীতিনির্ধারক হিসেবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে একজন প্রখ্যাত মানুষ। তিনি ইতিমধ্যেই জনগণের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন। দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য হয়ে তিনি সম্ভাবনার এক স্বর্ণদুয়ার উন্মোচন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, মন্ত্রীর সংসদীয় এলাকায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা আছে। এছাড়া একটি অর্থনৈতিক জোন করারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অচিরেই আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করা হবে।