নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ থেকে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করে পশ্চিমবঙ্গে
পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনা সংক্রান্ত রুলের
শুনানি আগামী ১২ জুন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পৃথিবীর কোন কোন দেশে তিনি
টাকা রেখেছেন এবং তার মামলা তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন
আদালত। আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি
মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ এ আদেশ
দেন।
পি কে হালদার ইস্যুতে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আমাদের বিভিন্ন আদেশের কারণেই
পি কে হালদার আজ সারা বিশ্বে অন্যভাবে আলোচিত। অর্থপাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত। আমরা
এমন আদেশ দেব, পি কে হালদার ও অন্যান্য অর্থপাচারকারীরা পৃথিবীর কোথাও
শান্তিতে থাকতে পারবে না।’
এর আগে সোমবার (১৬ মে) এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও
রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার
হালদারকে ভারতে গ্রেপ্তারের তথ্য আদালতকে জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতে আজ
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন। আর দুর্নীতি
দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার ও দেশে ফিরিয়ে আনা প্রশ্নে
দেড় বছর আগে স্বপ্রণোদিত রুল দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনো
হয়নি। এর মধ্যেই গত শনিবার (১৪ মে) ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হন পি কে হালদার।
তার বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করার অভিযোগ রয়েছে।
২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর ‘পি কে হালদারকে ধরতে
ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শিরোনামে
একটি দৈনিকে প্রতিবেদনে ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি বিবেচনায় নিয়ে ওই বছরের ১৯ নভেম্বর
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত
রুলসহ আদেশ দেন।
রুলে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার ও দেশে ফিরিয়ে আনতে
বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা-ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না এবং এ ক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তি বা
প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা
জানতে চাওয়া হয়। এ রুল এখন হাইকোর্টে চূড়ান্ত শুনানির জন্য উঠেছে।
উল্লেখ্য,
গত শনিবার (১৪ মে) ভারতের কেন্দ্রীয়
গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পশ্চিমবঙ্গ থেকে পলাতক পি কে
হালদারকে গ্রেপ্তার করে। ইডির বরাত দিয়ে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, পি
কে হালদার রেশন কার্ড, ভারতের জাতীয় পরিচয়পত্র, আয়কর দপ্তরের পরিচয়পত্র পি এ
এন (প্যান) ও আধার কার্ডের মতো ভারতীয় বিভিন্ন সরকারি পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে অবস্থান করছিলেন। সেখানে তিনি শিব শংকর
হালদার নাম নিয়েছিলেন।
যদিও সরকার জানিয়েছে, পি কে হালদারের গ্রেপ্তারের
বিষয়টি ভারত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।