English

পুরুষের এনআইডিতে নারীর পাসপোর্ট

পুরুষের এনআইডিতে নারীর পাসপোর্ট
সারাদেশ সিলেট

এস আর রুবেল মিয়া,  হবিগঞ্জ :

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে পাসপোর্ট বানাতে গিয়ে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের হারুন অর রশীদ জানতে পারলেন তার এনআইডি দিয়ে ৯ বছর আগেই পাসপোর্ট বানিয়েছেন এক নারী। সেই পাসপোর্ট দিয়ে ওই নারী ইতিমধ্যে একাধিকবার বিদেশ সফরও করেছেন। এদিকে আসল জাতীয় পরিচয়পত্রধারী হারুন অর রশিদ পাসপোর্টের জন্য গত ৪ মাস ধরে হবিগঞ্জ ও ঢাকা পাসপোর্ট অফিসে দৌড়াদৌড়ি করে কূলকিনারা পাচ্ছেন না।

জানা যায়, চুনারুঘাট উপজেলার ডুলনা গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে হারুন অর রশীদ গত ৬ মার্চ হবিগঞ্জ আঞ্চলিক অফিসে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। আবেদনের সময় অন্যান্য তথ্যাদির সঙ্গে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরও ব্যবহার করেন। আবেদনের পর তাকে ডেলিভারি সিøপ দেওয়া হয়। গত ২৯ মার্চ পাসপোর্ট পাওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা থেকে পাসপোর্ট আসছিল না। পরে হবিগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করলে তাকে জানানো হয়, একই নম্বরের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে মায়া খাতুন নামে এক নারী আগে পাসপোর্ট করেছেন। যার কারণে হারুন অর রশীদের পাসপোর্ট তৈরি করা যাচ্ছে না।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুনারুঘাট উপজেলার সোনাচংবাজার সংলগ্ন বসন্তপুর গ্রামের মাসুক মিয়ার স্ত্রী মায়া খাতুন ২০১৪ সালের ২৪ জুন ওই জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে হবিগঞ্জ আঞ্চলিক অফিস থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন। এরপর তিনি জর্ডানে যান। সেখানে ৩ মাস অবস্থানের পর লেবাননে আড়াই বছর এবং সৌদি আরব ও ওমানে ৫ বছর অবস্থান করেন। গত ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি রিয়াদে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে পাসপোর্ট নবায়ন করেন মায়া খাতুন। বর্তমানে তিনি দেশে অবস্থান করছেন। পাসপোর্টে থাকা মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে কল রিসিভ করেন মায়া খাতুনের শ^শুর লাল মিয়া। তিনি দেশ রূপান্তরে জানান, তার পুত্রবধূ এতদিন ধরে পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ ঘুরেছে। পাসপোর্ট নবায়নও করেছে, কোনো ত্রুটি ধরা পড়েনি। এখন কী হলো বুঝতে পারছেন না। যে দালালকে দিয়ে পাসপোর্ট করানো হয়েছে তার কাছে যোগাযোগ করে জেনে নেবেন। তবে তিনি মায়া খাতুনের জাতীয় পরিচয়পত্র সঠিক বলে দাবি করেন।

ভুক্তভোগী হারুন অর রশীদ বলেন, ‘হবিগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করতে বলে। ঢাকা অফিসে গিয়ে সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন শাখার উপপরিচালক নূরুল হুদাকে বিষয়টি অবগত করার পর তিনি হবিগঞ্জ অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। এখন হবিগঞ্জের সহকারী পরিচালক বলছেন ঢাকা অফিস থেকে চিঠি না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে।’ হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক বজলুর রশিদ বলেন, ‘গত ১২ মার্চ এ বিষয়ে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন শাখার উপপরিচালককেও জানানো হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্তের চিঠি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’