পাম
তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। গত মঙ্গলবার থেকে সরকারের এ
সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শত শত কৃষক দেশটির রাজধানী জাকার্তায় বিক্ষোভ করছে। তাঁদের
দাবি,
পাম তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে তাঁদের আয় কমে গেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিশ্বের
চতুর্থ জনবহুল দেশ ইন্দোনেশিয়া। দেশটি বিশ্বের শীর্ষ পাম তেল রপ্তানিকারক দেশ
হিসেবে পরিচিত। ভোজ্যতেলের ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত ২৮ এপ্রিল থেকে
পামতেল রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। ইন্দোনেশিয়ার এ সিদ্ধান্ত
বিশ্বব্যাপী উদ্ভিজ্জ তেলের বাজারকে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে।
রয়টার্স
জানিয়েছে,
কৃষকেরা পাম তেলভর্তি একটি ট্রাক নিয়ে মিছিল করতে করতে অর্থ
মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়কারী অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছে এবং সেখানে বিক্ষোভ করেছে।
বিক্ষোভকারীদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। একটি
প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছে—‘মালয়েশিয়ার
কৃষকেরা আনন্দে হাসছে, ইন্দোনেশিয়ার কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত
হচ্ছে’।
মালয়েশিয়া
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাম তেল উৎপাদক দেশ। তারা বলেছে, ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রপ্তানি বন্ধ করলেও মালয়েশিয়া বিশ্ববাজারে পাম
তেলের সরবরাহ অব্যাহত রাখবে।
বিক্ষোভকারী
কৃষকদের একটি গ্রুপ ‘আপকাসিন্দো’ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পর
থেকে পাম ফলের দাম সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে ৭০ শতাংশ কমে গেছে। আপকাসিন্দো
ধারণা করছে, ইতিমধ্যে ২৫ ভাগ মিল মালিক (পাম তেলের)
কৃষকদের কাছ থেকে পাম ফল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে।
আপকাসিন্দো
আরও জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ঘেরাওয়ের
পরিকল্পনা করছে। এখন ইন্দোনেশিয়ার আরও ২২টি প্রদেশে কৃষকেরা বিক্ষোভ করছে বলেও
জানিয়েছে আপকাসিন্দো।
গত
২৮ এপ্রিল পাম তেল এবং রান্নার তেল তৈরিতে ব্যবহৃত ডেরিভেটিভ পণ্য রপ্তানিতে
নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো। এ ঘোষণার পর এ
সপ্তাহে একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট জোকোর জনপ্রিয়তা
হ্রাস পেয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে ডিসেম্বরে নিত্য পণ্যের দাম বাড়ার কারণে তাঁর
জনপ্রিয়তায় এ রকম ধস নেমেছিল।
জরিপ
পরিচালনা সংস্থা পোলস্টার ইন্ডিকেটর পলিটিক ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জোকোর জনপ্রিয়তা মে মাসে ৫৮ দশমিক ১ শতাংশে নেমে গেছে।
২০১৫ সালে একবার তাঁর জনপ্রিয়তা ৫৩ শতাংশে নেমে গিয়েছিল।