English

দেশে প্রথমস্থানে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ

দেশে প্রথমস্থানে ফরিদপুরের  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ
সারাদেশ ঢাকা

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা:

ঢাকা মেডিকেল কলেজ সহ বাংলাদেশের সকল সরকারী মেডিকেল কলেজকে পেছনে ফেলে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) রাঙ্কিং এ ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১০ টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে প্রথমস্থান অর্জন করেছেন ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) মূলত সরকারি কর্মকা-ে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রণীত একটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক। এটি ঊর্ধ্বতন দপ্তরের সাথে অধস্তন দফতরের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তিতে সংশ্লিষ্ট অফিসের কৌশলগত উদ্দেশ্যসমূহ- সকল কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য গৃহীত কার্যক্রমসমূহ এবং এসকল কার্যক্রমের ফলাফল পরিমাপের জন্য কর্মসম্পাদন সূচক ও লক্ষ্যমাত্রা সমূহ বিধৃত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অর্থবছর সমাপ্ত হওয়ার পর ঐ বছরের চুক্তিতে নির্ধরিত লক্ষ্যমাত্রা সমূহের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট অফিসের প্রকৃত অর্জন মূল্যায়ন করা হয় । বছর শেষে মূল্যায়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ প্রথম স্থান লাভ করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের শিক্ষকগন জানান, অত্র কলেজের প্রিন্সিপাল স্যারের যোগ্য নেতৃত্বেই আজ আমাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, তিনি আমাদেরকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন শ্রেষ্ট হবার। আমরা সবাই সেটা বিশ্বাসের সাথে ধারণ করেছিলাম এবং সেইমত চেষ্টা করেছি। সে কারনেই হয়তো মহান আল্লাহ আমাদেরকে সম্মানিত করছেন। প্রথম দিকে আমরা সবাই যখন এক যোগে স্লোগান দিতাম আমরা হব সেরাদের সেরা, আমরা হব বাংলাদেশের ১ নম্বর মেডিকেল কলেজ, তখন অনেকেই বিস্মিত হয়ে আমাদের দিকে তাকাতেন- মনে করতেন আমরা হয়তো মন গড়া আষাঢ়ে গল্প করছি। ঢাকা থেকে বড় বড় স্যারেরা যখন ভিজিটে আসতেন- উনারাও বেশ অবাক হতেন। ভাবতেন, সাহস কত! কিন্তু আমাদের প্রিন্সিপাল স্যারের এই স্বপ্ন টা এক সময় আমাদের মধ্যে প্রত্যয়ের বীজ বুনল, আমরা সবাই একই বিশ্বাস নিয়ে কাজ করতে থাকলাম। এসময় কলেজের শিক্ষকগন এই সাফল্যের জন্য অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ও এপিএ ফোকাল পারসন হিসাবে ডা. ইকবাল হোসেনের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ এর অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান- বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ)তে এবার ৩৭ টি সরকারি মেডিকেল কলেজের সবাই অংশ গ্রহণ করবে। আমাদের এই প্রথম স্থান ধরে রাখার জন্য আমাদেরকেও আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। তিনি বলেন- এবছর শ্রেষ্ঠ মেডিকেল শিক্ষকদের মধ্যে ২য় ও ৩য় হয়েছেন যথাক্রমে অত্র কলেজের অধ্যাপক ডা. দিলরুবা জেবা ও ডা. রেজাউল কাদের, সহযোগী অধ্যাপক । এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য  ১৭জন ছাত্র-ছাত্রী ৩য় পেশাগত পরীক্ষায় এবার অনার্স মাক অর্জন করেছেন। বিশ্ব শিক্ষক দিবস এবার অত্র কলেজে দিনব্যাপি ব্যাপক আয়োজনে উদযাপিত হবে এবং গুনী শিক্ষকদের সম্মানিত করা হবে। প্রথমবারের মতো কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান করা হবে। এবং আগামী ৫ অক্টোবর দিনব্যাপি ব্যাপক আয়োজনে সব আনন্দ উদযাপন করা হবে। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ এর অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান আরো জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ক্রমান্বয়ে পেপারলেস অফিস হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় এই মাসের মধ্যভাগ হতে যুক্ত হতে যাচ্ছে কলেজের নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ, এটা আপাতত এন্ড্রয়েড প্লাটফর্মে কাজ করবে। অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষকগন সকল ক্লাসে হাজিরা নেয়া, আইটেম, কার্ড, ওয়ার্ড কমপ্লিশনসহ সকল পরীক্ষায় স্টুডেন্টদের মার্কিং করা, পরীক্ষার জন্য এলিজিবল স্টুডেন্ট বের করতে পারবেন। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অটোজেনারেটেড পরিচয়পত্র প্রদান, মার্কশীট জেনারেশন, সার্টিফিকেট জেনারেশন, ট্রান্সক্রিপ্ট জেনারেশন, সকল ডাটা স্টোরেজ করা, কোন স্টুডেন্টের ক্লাসে উপস্থিতির হার ৭৫% এর নীচে গেলে অটো তার ও তার শিক্ষকদের কাছে ম্যাসেজ পাঠানো, পারফর্মেন্স শীট জেনারেশন সহ অনেক কাজ অটোমেটিক কয়েকটা টাচে করা যাবে।  কোনদিন কোন শিক্ষক কি ক্লাস নিয়েছেন, সকল ক্লাস সময়মত সম্পন্ন হয়েছে কিনা, ছাত্রদের উপস্থিতি এমন বিষয়সমুহ বিভাগীয় প্রধান, ফেজ কোঅরডিনেটর, একাডেমিক কোঅর্ডিনেটর ও অধ্যক্ষ মহোদয় অ্যাপে টাচ করেই মনিটর করতে পারবেন। স্টুডেন্টদের ছুটির দরখাস্তও এর মাধ্যমে করতে হবে এবং সেটা এপ্রুভাল পেলে সংস্লিস্ট সকল স্থানে অটো আপডেট হবে এমনকি ক্লাসে উপস্থিতির ঘরেও। এমনকি ছুটি এপ্রুভাল করতে গেলে কতৃপক্ষের সামনে অটো ভেসে উঠবে সে স্টুডেন্টের ইতিমধ্যে ভোগকৃত ছুটির হিসাব। 

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নামে নামঙ্কিত দক্ষিণ বঙ্গের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই মেডিকেল কলেজ । মাননীয় প্রধান মন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার ডিজিটাল  বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রাখার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের সকল শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী বৃন্দ । 

ডিসিটি/ঢাকা/এসএমআ/ফপু/শেষ