English

বিজয়নগরে আকস্মিক এ বন্যা পরিস্থিতিতে ১৬৯২টি পরিবার পানি বন্দী

বিজয়নগরে আকস্মিক এ বন্যা পরিস্থিতিতে ১৬৯২টি পরিবার পানি বন্দী
সারাদেশ চট্টগ্রাম

আশীষ সাহা , ব্রাহ্মণবাড়িয়া  প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে তিতাস নদী এবং কাজলা বিলের পানি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে বিজয়নগর উপজেলার  ১৬৯২ টি পানি বন্দী পরিবার।  আকস্মিক এ বন্যা পরিস্থিতিতে আতংকও বাড়ছে প্লাবিত এলাকায়। বুধবার ( ২২ শে জুন) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার ১০টি  ইউনিয়নের আকস্মিক এ বন্যা পরিস্থিতিতে আতংকও বাড়ছে প্লাবিত এলাকায়।

পানি বাড়ার ফলে  তলিয়ে গেছে কৃষি জমি, ঘর বাড়ি,স্কুল  ও ফসলের মাঠ। ভেসেগেছে পুকুরের মাছ। রাস্তাঘাটও পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে । পানি বন্দি অবস্থায় আছে কয়েক হাজার মানুষ। আয় উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে চরম দূর্ভোগে পড়েছে বন্যা কবলিত মানুষজন। এ অবস্থায় এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সাহায্য সহযোগীতা পাননি বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের। তবে স্থানীয় প্রশাসনের দাবী এ লক্ষ্য কাজ করছেন তারা। আজ হরষপুর ইউনিয়নের ঐক্তার পুর গ্রামের শান্তিপুর এলাকায় উপজেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে বন্যা দুর্গতদের মাঝে ২০ জন পরিবারকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তলিয়ে গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া তিতাস নদীর পূর্বাঞ্চলের বিজয়নগর উপজেলার চর ইসলামপুর, পত্তন,হরষপুর, বুল্লা, এক্তারপুর, নয়াহাটি, চান্দুরা, বুধন্তি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম,এর মধ্যে  দত্ত খোলাইসলামপুর, শশুই, মনিপুর, পত্তন, লক্ষিমোড়া, কালিসিমা, , মানিকপুর,বিন্নি ঘাট,তালতলা, মেরাশানি,ফতিপুর, গাছতলা   সহ অন্তত বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে কৃষকের জমি,ফসলের মাঠ,স্কুল ও রাস্তাঘাট। ভেসেগেছে পুকুরের মাছ। পানি বন্ধি অবস্থায় কর্মহীন অবস্থায় আছেন,কয়েক হাজার মানুষ। গত এক সপ্তাহ ধরে এমন দূর্ভোগের মধ্যে থাকলেও সরকারী বা বেসরকারী কোনো ধরনের ত্রান পৌছেনি দূর্গত এলাকায়।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষ গুলো।  হরষপুর  ইউনিয়নের ঐক্তার পুর গ্রামের শান্তিপুর এলাকার মোঃ আব্দুর রহমান  বলেন, গরুছাগল ও মুরগী  সব পানির নিচ তলিয়ে গেছে। খুব সমস্যার মধ্যে আছি। এগুলোর রাখার কোনো জায়গা নেই।পরিবারের লোকজন নিয়ে খুবই অসহায় মধ্যেই দিন যাপন করছি চরমভাবে আর সাপের ভয়ে বসতবাড়ি ঘর ছেড়ে  ঐক্তার পুর উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছি। 

 

বুধন্তি ইউনিয়নের সামসু মিয়া বলেন প্রতিদিন আস্তে আস্তে পানি বাড়ছে। বাড়ীঘর পানির নিচে চলে যাচ্ছে।এলাকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা আকস্মিক এ বন্যা পরিস্থিতিতে জীবনযাপন আতংকও বাড়ছে।এখন পর্যন্ত এলাকায় কোন ধরনের সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়নি। এলাকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা অসহায় জীবনযাপন করছেন। তিনি সরকারের পক্ষ থেকে সবধরনের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করেছেন। তবে তিনি জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করছেন।

উপজেলার প্রকল্প কর্মকর্তা শাহিনুর জাহান বলেন, উপজেলার প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী , বিজয়নগর ১০ টি ইউনিয়নের  ১৬৯২ টি পানি বন্দী পরিবার রয়েছেন। আকস্মিক এ বন্যা পরিস্থিতিতে আতংকও বাড়ছে প্লাবিত এলাকায়। বেশ কয়েকটি  বন্যা কবলিত গ্রামে ঘুরে এসেছি এবং পানি বন্দী পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেছে।  বন্যা কবলিত ক্ষতিগ্রস্তদের  প্রশাসনের পক্ষ থেকে এাণ ও সবধরনের  সহযোগীতা করা হবে।

 

 বিজয়নগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ ইফরান উদ্দিন আহমেদ দি ডেইলি সিটিজেন টাইমস প্রতিনিধি কে বলেন আকস্মিক এ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জন্য  উপজেলার প্রশাসন ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে ,এ ব্যাপারে আমাদের খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। আর আমরা জরুরি  মিটিংও করেছি এ বিষয় নিয়ে, প্রত্যেক ইউনিয়নে ১ জন ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে শনাক্ত করে সহযোগীতা  করা হবে  । আমাদের উপজেলার প্রশাসনের কর্মকর্তারা সবগুলো এলাকায় ঘুরে দেখবেন। ত্রান তৎপড়তায়  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং আমি নিজেই আশ্রায়ন প্রকল্প  সহ  কয়েকটি  গ্রামের খোজ খবর নিয়েছি আর  ক্ষতিগ্রস্তদের  প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগীতা করা হবে। যেসব ইউনিয়নের  গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে। তাদেরকে দ্রুত আশ্রয় কেন্দ্রে  নেওয়ার জন্য  প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। 

তাছাড়া আমরা বন্যার কবলিতদের  নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে  কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রও প্রস্তুত রেখেছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে এসে উঠেছেন। আজ থেকে পানি বন্দী পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেছে ১৬৯২ টি পরিবার।  বন্যা কবলিত ক্ষতিগ্রস্তদের  প্রশাসনের পক্ষ থেকে এাণ সামগ্রী সহ সবধরনের  সহযোগীতা করা হবে।