এনআরবি
গ্লোবাল ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা লোপাটের মূলহোতা প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে
হালদার) তিন দিনের রিমান্ড শেষে আরও ১০ দিনের রিমান্ড আদেশ দিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের
রাজধানী কলকাতার একটি আদালত।আজ মঙ্গলবার পি কে হালদারকে আদালতে তোলার পর ১৪ দিনের রিমান্ড
আবেদন করা হয়।শুনানি শেষে আদালত তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে
গত শনিবার পি কে হালদারকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে গ্রেপ্তার করে ভারতের
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি)। তার
আগের দিনও পি কে হালদারের সম্পত্তির খোঁজে অভিযান চালায় ইডি।শনিবার গ্রেপ্তারের পর
পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে তুলে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। পরে আদালত সেই
সময় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে,
মঙ্গলবার সকালের দিকে ইডির কার্যালয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পি কে হালদারসহ
পাঁচ জনকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। শুনানির পর আদালত রিমান্ড আবেদন
মঞ্জুর করেন। তবে তার স্ত্রীকে ১০ দিনের জন্য বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অরিজিৎ চক্রবর্তী
সাংবাদিকদের বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলা করা হয়েছে। সেই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের
জন্য রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। ইডির কর্মকর্তারা বলেছেন, অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে
অর্থপাচারের সঙ্গে প্রদেশের কোনো রাজনীতিক জড়িত আছেন কি-না, সে বিষয়ে পি কে হালদার
এখন পর্যন্ত কোনও তথ্য দেননি।
ইডি
আইনজীবীরা আদালতকে বলেছেন, পি কে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদে বিপুল সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে।
প্রাথমিক তদন্তে ইডি ভারতে তার ১৫০ কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে।ইডি বলেছে,
ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধার সহায়তায় পি কে হালদার পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের একাধিক
রাজ্যে বিপুল সম্পদ পাচার করেছেন। ভারতে একাধিক অভিজাত বাড়িসহ বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন
বলে খোঁজ পেয়েছে ইডি।
এ তদন্ত
সংস্থা বলছে, তারা ইতিমধ্যে পি কে হালদারের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেছেন। এসব
নথিতে প্রাথমিকভাবে ভারতে তার ২০ থেকে ২৫টির মতো বাড়ির মালিকানার তথ্য মিলেছে।এর আগে
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পি কে হালদারের বিরুদ্ধে
২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, পলাতক
পি কে হালদার তার নামে অবৈধ উপায়ে এবং ভুয়া কোম্পানি ও ব্যক্তির নামে প্রায় ৪২৬ কোটি
টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন।
অবৈধ
সম্পদের অবস্থান গোপন করতে ১৭৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করেন পি
কে হালদার। তিনি এসব অ্যাকাউন্টে ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা জমা রাখেন। পাশাপাশি এসব অ্যাকাউন্ট
থেকে তার নামে ও বেনামে আরও ৬ হাজার ৭৬ কোটি টাকা উত্তোলন করেন। দুদকের তথ্য বলছে,
পি কে হালদার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।