আশীষ সাহা, আখাউড়া:
আজ বুধবার (৩১ আগস্ট) নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির, ও গুম, খুন, হত্যা, প্রতিবাদে দুপুর ৩টায় পৌরশহরের সড়ক বাজারের মটরস্ট্যান্ডে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় বিএনপি। সমাবেশে বিএনপির এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
অন্যদিকে রাজনীতির মাঠে ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামীলীগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবীতে একই দিন মটরস্ট্যান্ডসহ প্রতিটি ইউনিয়নে প্রতিবাদ সমাবেশ আহবান করে আওয়ামীলীগ। উভয় দলের এ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে হঠাৎ করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে আখাউড়ার রাজনৈতিক অঙ্গন। দীর্ঘদিন পর আখাউড়ায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সমাবেশকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মনে সৃষ্টি হয় উদ্বেগ উৎকন্ঠা। দু’দলের সমাবেশকে ঘিরে কোন বিচ্ছৃঙ্খলা হয় কীনা এমন শঙ্কা দেখা দেয় জনমনে। সময় যতই এগিয়ে আসতে থাকে উদ্বেগ উৎকন্ঠা ততই যেন বাড়তে থাকে। তবে সকল জল্পনার কল্পনা অবসান ঘটিয়ে আওয়ামীলীগ প্রতিবাদ সমাবেশ করলেও মাঠে দেখা যায়নি বিএনপির নেতাকর্মীকে।
সকাল থেকে বিএনপির কোন নেতাকর্মীকে মাঠে দেখা যায়নি বেলা সোয়া তিনটা পর্যন্ত। বিএনপির সমাবেশ বাস্তবায়নের কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। সমাবেশ বাস্তবায়নে কোন মঞ্চ বা প্যান্ডেল তৈরি করেনি।
অপরদিকে সকাল থেকে পৌরশহরের মটরস্ট্যান্ড, উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন, মোগড়া চৌমুহনী এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ করছে আওয়ামীলীগ। এতে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলালীগ সহ অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত রয়েছে। এছাড়াও ধরখার, মনিয়ন্দ, খড়মপুর বাইপাস এলাকায় আওয়ামীলীগের অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে।
আখাউড়া সড়ক বাজারের মটরস্ট্যান্ডে সমাবেশে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মোঃ তাকজিল খলিফা কাজল সহ যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলালীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিল।
আখাউড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ জয়নাল আবেদীন আব্দু বলেন, আমরা জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের কাছে অনুমতি চেয়ে দরখাস্ত করেছি। কিন্তু প্রশাসন লিখিত বা মৌখিক কোন অনুমতি দেয়নি। কিন্তু আওয়ামীলীগ সমগ্র উপজেলা প্রোগ্রাম করতেছে। এই অবস্থায় আমরা কী করবো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। তবে দেখা যাক কি হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ডাঃ খোরশেদ আলম ভূইয়া বলেন, সমাবেশ করার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। এবং একই স্থানে আওয়ামীলীগ প্রোগ্রাম শুরু করেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে আলাদা ভেন্যু দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু প্রশাসন আমাদেরকে অন্য জায়গায় ভেন্যু দিতে রাজি না। তারপরেও আমরা আমাদের পরামর্শ চালিয়ে যাচ্ছি।
একই দিন একই স্থানে সমাবেশ করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মোঃ তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, আগষ্ট আমাদের শোকের মাস। শোকের মাসে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবীতে আমরা দিনব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ করেছি।