বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী সাবিলা নূর। নিজের ফেসবুকে ছবি শেয়ার করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এ অভিনেত্রী। এর পরই সমালোচকদের উদ্দেশে লম্বা পোস্ট করেন সাবিলা।
নেটদুনিয়ায় কটু কথা ছড়িয়েছিল সাবিলা নূরকে নিয়ে। তাকে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এমন কথায় বেশ আহত হয়েছিলেন এ অভিনেত্রী। সমাবর্তন শেষে এ কথার জবাব দিয়েছেন সাবিলা নূর।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে পোস্ট করা সাবিলা নূরের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো–
যারা বলছেন আমাকে এনএসইউ এবং ব্র্যাক থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল, তাদের জন্য এই পোস্ট। আমার এআইইউবি এবং ব্র্যাক দুটির গ্রেডশিট আমি পোস্টে দিয়েছি, আশা করি এই প্রশ্নের জবাব আপনারা পেয়ে যাবেন।
হ্যাঁ, এনএসইউতে আমার গ্রেড ভালো ছিল না, কিন্তু আমাকে বের করে দেয়া হয়েছিল সেটা ভুল। তখন আমি মাত্রই নাটকে কাজ শুরু করি এবং আমি পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে গিয়েছিলাম। এছাড়া আমি এমন একটা ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়েছিলাম যেখানে আমার পড়ার আগ্রহ ছিল না, পরিবারের চাপে ভর্তি হওয়া। আমি কিছু সময়ের জন্য আমেরিকা চলে যাই এবং ফিরে এসে আমার মেজর ও ইউনিভার্সিটি দুটোই পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নেই।
ব্র্যাকে আমি তিন সেমিস্টার ছিলাম এবং বহুল আকাঙ্ক্ষিত ভিসি তালিকাভুক্ত ছাত্রীও ছিলাম, কিন্তু যখন আমাকে বলা হলো টার্কে যেতেই হবে, আমি পুরোপুরি ভেঙে পড়ি। শুধু মিডিয়ার কাজের জন্য নয়, আমি তখন ডিপ্রেশনে ভুগছিলাম। আমি জানতাম পরিবার ছাড়া তিনমাস থাকা আমার পক্ষে সম্ভব হত না। তারপরই আমি এআইইউবিতে ক্রেডিট ট্রান্সফার করি এবং আমার জন্য সেটাই সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। এই পথ চলায় আমার যত বাধা এসেছে ততই আমার জেদ চেপে গিয়েছিল পড়াশোনার। সকালের ক্লাসগুলো করে আমি নাটকের কাজে যেতাম, অনেক রাতে বাড়ি ফিরে পড়াশোনা করতাম, দুই-এক ঘণ্টা ঘুমিয়ে আবার ক্লাস করতাম। আমার সিজিপিএ আমার হার না মানা পরিশ্রম-সংকল্প আর আমার পরিবার ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণার ফসল।
যেটা ছিল আমার পরম আরাধ্য কিছুর উদযাপন, আপনাদের ট্রল-মিম-এবং ভয়ানক মিথ্যা কিছু অভিযোগে সেটা হয়ে যাচ্ছে দুঃস্বপ্নের মত। ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের পিছনে যে একজন সত্যিকারের রক্তমাংসের মানুষ আছে সেটা ভুলে যাননি তো? এআইইউবির অথরিটিকে পর্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে! কি ভয়াবহ!
মানুষ কি নতুন করে শুরু করে সফল হতে পারে না? বদলাতে পারে না? নিজের লক্ষ্য অর্জনে নিজের সবটা দিয়ে উঠে পড়ে লেগে পড়তে পারে না? আমরা কি এতটাই অসহনশীল হয়ে পড়েছি যে কোনো রকম কারণ ছাড়াই একজনের ভীষণ পরিশ্রমের একটা ভালো খবরকে দুঃস্বপ্ন বানিয়ে দিতে একটুও দ্বিধা করছি না?